জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে কি কি কাগজপত্র লাগবে দেখে নিন
অনার্স ভর্তি হতে যেসব কাগজপত্র লাগবে ও কত টাকা লাগতে পারে – বিস্তারিত জানতে পড়ুন
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্স ১ম বর্ষে ভর্তির প্রথম মেধা তালিকা ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই জানেন না, ভর্তি প্রক্রিয়া কীভাবে সম্পন্ন করতে হবে,
কী পরিমাণ টাকা লাগতে পারে কিংবা কোন কোন কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে হবে। এসব প্রশ্নের সমাধান নিয়েই আজকের এই লেখাটি।
অনলাইনে ভর্তি ফরম পূরণ কিভাবে করবেন
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত ওয়েবসাইটে গিয়ে (http://www.nu.ac.bd/admissions) শিক্ষার্থীরা তাদের রোল নম্বর এবং পিন নম্বর দিয়ে চূড়ান্ত ভর্তি ফরম পূরণ করতে পারবে।
ফরম পূরণ করার পর সেটিকে পিডিএফ আকারে ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিতে হবে। ফরমের নির্দিষ্ট স্থানে শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর করতে হবে এবং এটি কলেজে জমা দেওয়ার জন্য সংরক্ষণ করতে হবে।
আরো পড়ুন: HSC 2025 বাংলা ১ম পত্র MCQ সমাধান (সকল বোর্ড)
অনার্স ভর্তি হতে কত টাকা লাগতে পারে
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশন ফি নির্ধারিত রয়েছে ৪৮৫ টাকা। তবে বাস্তবে এই ফি ছাড়াও বিভিন্ন কলেজে ভর্তির সময় বাড়তি কিছু টাকা নেওয়া হয়, যা কলেজভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে।
সরকারি কলেজগুলোর ক্ষেত্রে ভর্তি ফি তুলনামূলকভাবে কম, সাধারণত ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু বেসরকারি কলেজে এই খরচ অনেক বেশি হতে পারে। অনেক সময় ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্তও নেওয়া হয়ে থাকে।
এই অর্থের মধ্যে সেমিনার ফি, শিক্ষা সফর ফি, বিভাগীয় ফি, ক্লাস রুটিন বাবদ খরচ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকে। তাই ভর্তি হতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেওয়া হয়, নির্দিষ্ট কলেজের ওয়েবসাইট অথবা নোটিশ বোর্ড থেকে বিস্তারিত ফি সম্পর্কে জেনে নেওয়া উত্তম।
অনার্স ভর্তি হতে যেসব কাগজপত্র লাগবে
ভর্তি প্রক্রিয়া চলাকালীন শিক্ষার্থীকে নির্দিষ্ট কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হয়, যেগুলো পূর্বে থেকে প্রস্তুত রাখা ভালো। নিচে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলোর তালিকা দেওয়া হলো:
চূড়ান্ত ভর্তি ফরমের প্রিন্ট কপি: অনলাইনে ফরম পূরণ করে সেটির প্রিন্ট নিতে হবে।
প্রাথমিক আবেদন ফরমের কপি: আগেই কলেজ কর্তৃক প্রদত্ত অংশসহ।
পাসপোর্ট ও স্ট্যাম্প সাইজের ছবি: সদ্য তোলা ২-৩ কপি ছবি।
এসএসসি ও এইচএসসি সনদপত্র/প্রশংসাপত্রের ফটোকপি: মূল সনদ সঙ্গে রাখতে হতে পারে।
এসএসসি ও এইচএসসি নম্বরপত্র (মার্কশিট): মূল ও সত্যায়িত ফটোকপি।
রেজিস্ট্রেশন কার্ড (SSC ও HSC): বোর্ড থেকে পাওয়া রেজিস্ট্রেশন কার্ডের ফটোকপি।
জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্মসনদ/নাগরিকত্ব সনদ: যেকোনো একটি প্রয়োজন হতে পারে।
ভর্তির জন্য নির্ধারিত ফি: যথাযথ সময়ের মধ্যে জমা দিতে হবে।
বি.দ্রঃ: এসব কাগজপত্রের ৩-৪ কপি ফটোকপি করে রাখতে হবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ ভর্তি কার্যক্রমের সময় মূল কপি দেখে সত্যায়িত কপি জমা রাখতে পারে। কিছু কলেজ এইচএসসি’র মূল মার্কশিট জমা রাখতে বলে, তাই সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
বিষয়ের পরিবর্তনের সুযোগ
অনেক সময় শিক্ষার্থীরা মেধা তালিকায় যেই বিষয়ে চান্স পায়, সেটি তাদের পছন্দ না-ও হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিষয় পরিবর্তনের একটি সুযোগ দিয়ে থাকে।
অনলাইনে চূড়ান্ত ভর্তি ফরম পূরণ করার সময় “বিষয় পরিবর্তন করতে ইচ্ছুক” অংশে Yes নির্বাচন করতে হবে। পরে কলেজে আসন খালি থাকলে এবং শিক্ষার্থীর মেধার ভিত্তিতে বিষয় পরিবর্তনের অনুমোদন দেওয়া হয়।
বিষয় পরিবর্তনের ফলাফল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। ফল প্রকাশের পর শিক্ষার্থীদের আবারও নতুন বিষয়ের ফরম ডাউনলোড করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কলেজে গিয়ে ভর্তি হতে হয়। তবে এক্ষেত্রে নতুন করে কোনো ফি জমা দিতে হয় না।
ভর্তি সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
- কাগজপত্র জমা দেওয়ার সময় সব ডকুমেন্টস ঠিকভাবে গুছিয়ে নিয়ে যান।
- কোনো কাগজের মূল কপি কলেজে জমা দেওয়া লাগলে, কলেজ থেকে রিসিভ কপি সংগ্রহ করে রাখুন।
- ভর্তি ফি জমা দেওয়ার রসিদ সংরক্ষণ করুন।
- যদি আপনি সরকারি কলেজে চান্স পান, ভর্তি ফি তুলনামূলকভাবে কম হবে, তাই আগে সেই অপশন বিবেচনা করুন।
- বেসরকারি কলেজে ভর্তি হতে চাইলে ভর্তি ফি জেনে তবেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিন।
শেষ কথা
অনার্স ভর্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এক্ষেত্রে ভুল বা দেরি হলে আপনার শিক্ষাজীবন পিছিয়ে যেতে পারে। তাই সময়মতো সঠিকভাবে ফরম পূরণ, কাগজপত্র প্রস্তুতকরণ এবং ভর্তি ফি পরিশোধ করে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন।
প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে সংশ্লিষ্ট কলেজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা সরাসরি কলেজে গিয়ে খোঁজ নেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।