ঘরে বসে অর্থ উপার্জন করার পদ্ধতিকে কি বলে
বর্তমানে প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে ঘরে বসেই বৈধভাবে অর্থ উপার্জনের নানা পদ্ধতি তৈরি হয়েছে, যাকে অনলাইন ইনকাম বা ডিজিটাল আয় বলা হয়।
ইন্টারনেট, মোবাইল অ্যাপ ও অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে শিক্ষার্থী, গৃহিণী ও সাধারণ মানুষ ঘরে বসে আয় করছেন, যা আত্মকর্মসংস্থানের এক নতুন দিগন্ত তৈরি করেছে।
ঘরে বসে অর্থ উপার্জন করার পদ্ধতিকে কি বলে?
ঘরে বসে অর্থ উপার্জনের পদ্ধতিকে সাধারণভাবে বলা হয় “অনলাইন ইনকাম“, “ঘরে বসে আয়”, বা “ওয়ার্ক ফ্রম হোম”।
আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে মানুষ এখন ঘরে বসেই বিভিন্ন পেশাগত বা সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারছে। নিচে এই ধরনের ইনকামের বিভিন্ন পদ্ধতির নাম এবং তাদের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দেওয়া হলোঃ
১. ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing)
এটি হলো ঘরে বসে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের ক্লায়েন্টদের কাজ করে টাকা উপার্জনের একটি পদ্ধতি। কাজের ধরন হতে পারে গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং, ডেটা এন্ট্রি, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি। জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং সাইটঃ Upwork, Fiverr, Freelancer ইত্যাদি।
২. রিমোট জব (Remote Job)
অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের অফিসে না এনে ঘরে বসে কাজ করার সুযোগ দেয়। একে রিমোট জব বলা হয়। এটি সম্পূর্ণ চাকরির মতো হলেও কাজের স্থান হয় নিজের বাসা। IT, কাস্টমার সার্ভিস, অ্যাকাউন্টিং, মার্কেটিংসহ নানা সেক্টরে রিমোট জব পাওয়া যায়।
৩. প্যাসিভ ইনকাম (Passive Income)
এমন একটি আয়ের পদ্ধতি যেখানে আপনি একবার পরিশ্রম করলেও সেটি থেকে নিয়মিত আয় আসতে পারে। উদাহরণস্বরূপঃ ইউটিউব ভিডিও বানানো, ব্লগ লেখা, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, ইবুক বিক্রি ইত্যাদি।
৪. ড্রপশিপিং ও ই-কমার্স (Dropshipping & E-commerce)
নিজস্ব পণ্য ছাড়াই অনলাইন স্টোর খুলে অন্য কোম্পানির পণ্য বিক্রি করে আয় করার পদ্ধতিকে ড্রপশিপিং বলা হয়। এছাড়া নিজের পণ্য বিক্রির মাধ্যমে যারা অনলাইন ব্যবসা করে, তাদের আয়কে ই-কমার্স ইনকাম বলা হয়।
৫. অনলাইন টিউশন ও কোর্স বিক্রি
আপনি যদি কোনো বিষয়ে দক্ষ হন, তাহলে অনলাইনে কোর্স তৈরি করে বা ভার্চুয়াল ক্লাস নিয়ে টাকা আয় করতে পারেন। এটি বিশেষভাবে জনপ্রিয় শিক্ষকদের মধ্যে।
৬. ডিজিটাল মার্কেটিং
অনলাইনে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের প্রচার করে কমিশনের ভিত্তিতে আয় করা যায়। যেমনঃ Facebook Boosting, Google Ads, SEO, Email Marketing ইত্যাদি কাজের মাধ্যমে ঘরে বসে উপার্জন করা যায়।
৭. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing)
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো অনলাইনে অন্যের পণ্য বা সেবা প্রচার করে বিক্রি করানো এবং প্রতিটি বিক্রির জন্য কমিশন পাওয়া।
আপনি যদি একটি ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রচার করতে পারেন, তবে এটি একটি লাভজনক আয় মাধ্যম হতে পারে। উদাহরণস্বরূপঃ Amazon Affiliate, Daraz Affiliate, ClickBank ইত্যাদি।
৮. ইউটিউবিং (YouTubing)
নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল খুলে ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে দর্শক বাড়ালে আপনি Google AdSense ও স্পন্সরশিপের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
এটি একটি শক্তিশালী প্যাসিভ ইনকাম উৎস। ভিডিও হতে পারে শিক্ষা, বিনোদন, টেক রিভিউ, ভ্লগ, কুকিং ইত্যাদি যেকোনো বিষয়ের ওপর।
৯. ব্লগিং ও কনটেন্ট রাইটিং (Blogging & Content Writing)
আপনি যদি লেখালেখিতে পারদর্শী হন, তাহলে একটি ব্লগ খুলে নিয়মিত তথ্যবহুল লেখা প্রকাশ করে গুগল অ্যাডসেন্স বা অন্যান্য বিজ্ঞাপনী নেটওয়ার্ক থেকে আয় করতে পারেন। এছাড়াও বিভিন্ন ওয়েবসাইটে কনটেন্ট লেখার বিনিময়ে পারিশ্রমিক পাওয়া যায়।
১০. ফেসবুক/ইনস্টাগ্রাম ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং
যদি আপনার ফেসবুক পেজ, গ্রুপ বা ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ার বেশি থাকে, তবে আপনি বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য প্রোমোট করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। একে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং বলা হয়।
১১. গ্রাফিক ডিজাইন ও ভিডিও এডিটিং
Photoshop, Illustrator, Premiere Pro, Canva ইত্যাদি সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনি ঘরে বসে লোগো ডিজাইন, পোস্টার, ভিডিও এডিটিং এর কাজ করতে পারেন। Fiverr ও Upwork এ এই ধরনের কাজের অনেক চাহিদা রয়েছে।
১২. অনলাইন সার্ভে ও পিটিসি সাইট (Survey & PTC Sites)
অনেক বিদেশি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন পণ্যের সম্পর্কে মতামত জানার জন্য অর্থ প্রদান করে। এই ধরনের সার্ভেতে অংশগ্রহণ করে ও বিজ্ঞাপন দেখে আয় করা যায়।
যেমনঃ TimeBucks, ySense, InboxDollars ইত্যাদি। তবে এই ক্ষেত্রের অনেক সাইট স্ক্যামও হতে পারে, তাই সতর্ক থাকতে হয়।
১৩. ডেটা এন্ট্রি ও টাইপিং জব
কম্পিউটারে দ্রুত টাইপিং জানলে আপনি সহজেই ডেটা এন্ট্রি কাজ করতে পারেন। এটি সাধারণত টাইপিং, ফর্ম পূরণ, কনভার্সন ইত্যাদি বিষয়ক হয়। এই কাজের জন্য বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন কম, তাই নতুনদের জন্য ভালো একটি আয় মাধ্যম।
১৪. ভয়েস ওভার ও অডিও বুক রেকর্ডিং
যারা স্পষ্ট উচ্চারণে কথা বলতে পারেন, তারা বিভিন্ন স্ক্রিপ্ট পড়ে অডিও রেকর্ড করে ভয়েস ওভার কাজ করতে পারেন। ইংরেজি বা বাংলায় অডিও বুক বা বিজ্ঞাপন রেকর্ডিংয়ের জন্য অনলাইনে কাজ পাওয়া যায়।
১৫. স্টক ফটোগ্রাফি ও ভিডিও বিক্রি
আপনি যদি ফটোগ্রাফি বা ভিডিওগ্রাফি ভালো পারেন, তাহলে সেগুলো Shutterstock, Adobe Stock, iStock ইত্যাদি সাইটে আপলোড করে বিক্রি করতে পারেন। যেসব ছবি বা ভিডিও মানুষ বারবার কিনবে, সেগুলো থেকে আপনি বারবার আয় করতে পারবেন।
১৬. ফেসবুক পেজ মনিটাইজেশন
বর্তমানে ফেসবুকেও ইউটিউবের মতো ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে ইনকাম করা সম্ভব। আপনি যদি নিয়মিত মানসম্পন্ন ভিডিও আপলোড করেন এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ ফলোয়ার ও ভিউ অর্জন করতে পারেন,
তাহলে Facebook Ad Breaks এর মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন। বাংলাদেশেও এখন এটি চালু রয়েছে।
১৭. মোবাইল অ্যাপ দিয়ে ইনকাম (Real Money Apps)
অনেক অ্যাপ রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করে আপনি ঘরে বসে আয় করতে পারেন। যেমন: ভিডিও দেখা, গেম খেলা, ইনভাইট করা, অ্যাড দেখা, সার্ভে ফিলআপ ইত্যাদির মাধ্যমে।]
কিছু জনপ্রিয় অ্যাপ হলোঃ Binomo (কৌশলী ব্যবহার), WowApp, ClipClaps, Cashzine ইত্যাদি। তবে বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করে ব্যবহার করা জরুরি।
১৮. ভিওআইপি (VoIP) ও কল সেন্টার সার্ভিস
অনেকে ঘরে বসে আন্তর্জাতিক কল সেন্টার বা ভিওআইপি ভিত্তিক কাস্টমার সার্ভিসের কাজ করে থাকে। ইংরেজিতে কথা বলার দক্ষতা থাকলে এটি একটি লাভজনক পেশা হতে পারে।
১৯. ট্রান্সক্রিপশন কাজ (Transcription Jobs)
ভিডিও বা অডিও শুনে তা টাইপ করে লিখে ফেলার কাজ হলো ট্রান্সক্রিপশন। ইংরেজি ভাষা বুঝতে পারলে Rev, TranscribeMe, GoTranscript এর মতো সাইটে এই কাজ করা যায়।
২০. ওয়েবসাইট বা অ্যাপ টেস্টিং
বিভিন্ন কোম্পানি তাদের ওয়েবসাইট বা অ্যাপ বাজারে ছাড়ার আগে সাধারণ ব্যবহারকারীদের দিয়ে তা পরীক্ষা করায়। আপনি ব্যবহার করে মতামত দিলে তারা আপনাকে অর্থ প্রদান করে। জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মঃ UserTesting, TryMyUI ইত্যাদি।
২১. ই-বুক লেখা ও প্রকাশ
আপনার যদি লেখার প্রতি আগ্রহ থাকে, তাহলে Amazon Kindle Direct Publishing (KDP)-এর মাধ্যমে আপনি নিজের লেখা ই-বুক প্রকাশ করে আয় করতে পারেন। এটি প্যাসিভ ইনকামের অন্যতম উপায়।
২২. ভিজুয়াল আর্ট ও ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রি
যারা ইলাস্ট্রেশন, ডিজিটাল পেইন্টিং বা প্রিন্টেবল ডিজাইন তৈরি করতে পারেন, তারা Etsy, Gumroad বা Creative Market এর মতো প্ল্যাটফর্মে ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করতে পারেন।
২৩. অনলাইন কোর্স তৈরির মাধ্যমে আয়
আপনি যদি কোনো বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হন (যেমনঃ প্রোগ্রামিং, ফটোগ্রাফি, ডিজাইন, মার্কেটিং), তাহলে Udemy বা Skillshare-এর মতো প্ল্যাটফর্মে কোর্স তৈরি করে আয় করতে পারেন।
২৪. ক্লাউড মাইনিং ও ক্রিপ্টো ইনকাম
অনেকে এখন ঘরে বসে ক্লাউড মাইনিং বা ক্রিপ্টোকারেন্সি ইনভেস্টমেন্টের মাধ্যমে আয় করছে। তবে এটি ঝুঁকিপূর্ণ, তাই বিনিয়োগের আগে ভালোভাবে গবেষণা করা উচিত।
২৫. ভিএ (Virtual Assistant) হিসেবে কাজ করা
বিভিন্ন উদ্যোক্তা বা অনলাইন ব্যবসায়ী তাদের ভার্চুয়াল সহকারী নিয়োগ করে থাকেন। আপনি ইমেইল ম্যানেজমেন্ট, সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলিং, ডেটা এন্ট্রি ইত্যাদি কাজ করে আয় করতে পারেন।
২৬. ড্রপশিপিং বিজনেস
ড্রপশিপিং এমন একটি অনলাইন ব্যবসা যেখানে আপনি কোনো পণ্য নিজের কাছে না রেখে অন্যের প্রোডাক্ট অনলাইনে বিক্রি করেন।
যখন কেউ আপনার ওয়েবসাইট থেকে কিছু কেনে, তখন আপনি সেই অর্ডারটি সরাসরি মূল সাপ্লায়ারকে পাঠান এবং সাপ্লায়ার পণ্যটি গ্রাহকের ঠিকানায় পাঠিয়ে দেন। Shopify ও WooCommerce এর মাধ্যমে সহজেই এই ব্যবসা শুরু করা যায়।
২৭. ফ্রিল্যান্স ট্রান্সলেশন (Translation Work)
যদি আপনি বাংলা, ইংরেজি বা অন্য কোনো ভাষায় দক্ষ হন, তাহলে অনুবাদের কাজ করে আয় করতে পারেন। Fiverr, Gengo, ProZ, ও TranslatorsCafe এর মতো সাইটে এই ধরনের কাজ পাওয়া যায়।
২৮. পডকাস্টিং (Podcasting)
আপনার যদি কথা বলার দক্ষতা থাকে এবং নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ধারাবাহিক আলোচনা করতে পারেন, তাহলে পডকাস্ট তৈরি করে Spotify, Apple Podcasts বা Anchor.fm এর মাধ্যমে আয় করতে পারেন বিজ্ঞাপন বা স্পনসরশিপ থেকে।
২৯. টিউশন ও অনলাইন ক্লাস
আপনি ঘরে বসেই Zoom, Google Meet বা Facebook Live এর মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের টিউশন দিতে পারেন।
আজকাল অনেক অভিভাবক বাসায় না এনে অনলাইনে শিক্ষক খোঁজেন। এতে আপনি ঘরে বসে নির্ভরযোগ্য উপায়ে আয় করতে পারবেন।
৩০. নকশা ও হস্তশিল্প বিক্রি
আপনার যদি হস্তশিল্প বা ক্রাফট তৈরির দক্ষতা থাকে (যেমন: জামার ডিজাইন, ব্যাগ, অলংকার ইত্যাদি), তাহলে আপনি তা Facebook Page, Instagram, অথবা Daraz এর মতো ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে বিক্রি করে আয় করতে পারেন।
৩১. ই-বুক টাইপিং বা স্ক্যান বই টাইপ করা
অনেক প্রতিষ্ঠান স্ক্যান করা বই বা হস্তলিখিত পাণ্ডুলিপি ডিজিটাল ফরম্যাটে টাইপ করার জন্য কর্মী খোঁজে। যারা টাইপিং পারেন, তারা সহজেই এই কাজ ঘরে বসে করতে পারেন।
৩২. অনলাইন কনসালটেন্সি বা কোচিং
আপনি যদি কোনো বিষয়ে (যেমনঃ স্বাস্থ্য, ফিটনেস, শিক্ষা, ক্যারিয়ার গাইড, বিজনেস) ভালো জ্ঞান রাখেন, তাহলে ভিডিও কলের মাধ্যমে বা পেইড কোর্সের মাধ্যমে কনসালটেন্সি দিয়ে আয় করতে পারেন।
৩৩. ওয়েব রিসার্চ ও ভার্চুয়াল রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট
অনেক লেখক, ছাত্র বা উদ্যোক্তা তাদের গবেষণার জন্য ইন্টারনেট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে দিতে একজন রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট খোঁজেন। আপনি এই ধরনের তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপন করে আয় করতে পারেন।
৩৪. ইন্টারনেট রেডিও বা লাইভ শো হোস্টিং
অনলাইনে রেডিও শো বা Facebook Live টক শো আয়োজন করে স্পনসর সংগ্রহ ও বিভিন্ন প্রোডাক্ট প্রমোশনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন সম্ভব।
৩৫. NFT ডিজাইন ও বিক্রি
যারা ডিজিটাল আর্ট তৈরি করেন, তারা Non-Fungible Token (NFT) আকারে ছবি তৈরি করে OpenSea বা Rarible এর মতো প্ল্যাটফর্মে বিক্রি করতে পারেন। এটি নতুন তবে দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ কুইজ খেলে টাকা ইনকাম app | কুইজ খেলে টাকা ইনকাম করার অ্যাপস
৩৬. ওয়েবসাইট তৈরি করে ইনকাম (Blogging)
আপনি যদি লিখতে ভালোবাসেন, তাহলে একটি ব্লগ সাইট খুলে বিভিন্ন বিষয় যেমন ভ্রমণ, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ইত্যাদি নিয়ে লিখতে পারেন। Google AdSense, স্পনসরশিপ, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ইত্যাদির মাধ্যমে আপনি ব্লগ থেকে ইনকাম করতে পারেন।
৩৭. স্টক ফটোগ্রাফি বিক্রি
আপনার যদি ভালো ক্যামেরা বা মোবাইল ফটোগ্রাফির দক্ষতা থাকে, তাহলে আপনি আপনার তোলা ছবি ShutterStock, Adobe Stock, iStock ইত্যাদি সাইটে বিক্রি করতে পারেন। ছবিগুলো একবার আপলোড করলেই বারবার বিক্রি হয়। এটি একটি প্যাসিভ ইনকাম সোর্স।
৩৮. CPA মার্কেটিং (Cost Per Action)
এই মডেলে আপনি অন্যকে কোনো ফ্রি সাইনআপ, অ্যাপ ডাউনলোড, ইমেইল সাবমিট বা ফর্ম ফিলআপ করালে ইনকাম পান। CPAGrip, OGAds, MaxBounty হলো জনপ্রিয় CPA নেটওয়ার্ক।
৩৯. ডেটা এন্ট্রি কাজ
অনেক প্রতিষ্ঠান ঘরে বসে ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ দেয়। আপনি বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে বা ফেসবুক গ্রুপে এই কাজ পেতে পারেন। এতে কম্পিউটার টাইপিং জানা থাকলেই কাজ করা সম্ভব।
৪০. কন্টেন্ট রাইটিং বা ব্লগ আর্টিকেল লেখা
অনলাইন পোর্টাল, ওয়েবসাইট, ব্লগ, ইউটিউব স্ক্রিপ্ট লেখার জন্য বাংলা ও ইংরেজি কন্টেন্ট রাইটারদের চাহিদা রয়েছে। Fiverr, Freelancer, Upwork ছাড়াও সরাসরি ক্লায়েন্টদের কাছ থেকেও কাজ পাওয়া যায়।
৪১. ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিস প্রদান
আপনি যদি SEO, Social Media Marketing, Google Ads, Email Marketing ইত্যাদি বিষয়ে দক্ষ হন, তাহলে ক্লায়েন্টদের ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিস দিয়ে আয় করতে পারেন।
৪২. ই-কমার্স স্টোর চালু করা
Daraz, Evaly বা নিজের Facebook Page এর মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন প্রোডাক্ট যেমন পোশাক, কসমেটিক্স, ইলেকট্রনিকস, হস্তশিল্প ইত্যাদি বিক্রি করে ইনকাম করতে পারেন। এখন অনেকেই শুধুমাত্র Facebook Page থেকেই লাখ টাকা আয় করছে।
৪৩. ফন্ট ডিজাইন ও বিক্রি
যারা টাইপোগ্রাফি এবং গ্রাফিক ডিজাইনে পারদর্শী, তারা নিজস্ব বাংলা বা ইংরেজি ফন্ট ডিজাইন করে তা Creative Market বা MyFonts এ বিক্রি করতে পারেন।
৪৪. ইউজার ইন্টারফেস (UI) ও ইউজার এক্সপেরিয়েন্স (UX) ডিজাইন
ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ ডিজাইন করার জন্য এখন UI/UX ডিজাইনারদের অনেক চাহিদা। Adobe XD, Figma, Sketch ব্যবহার করে আপনি ঘরে বসে আন্তর্জাতিক মার্কেটে কাজ করতে পারেন।
৪৫. ডোমেইন ফ্লিপিং বা রিসেলিং
অনেকেই জনপ্রিয় ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাময় ডোমেইন আগেই কিনে রাখে, পরে তা উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে। এটি একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে যদি আপনি ট্রেন্ড বুঝে ডোমেইন কিনতে পারেন।
৪৬. ডিজিটাল প্রোডাক্ট তৈরি ও বিক্রি
আপনি যদি ই-বুক, ডিজিটাল প্ল্যানার, টেমপ্লেট, ডিজাইন বা কোর্স তৈরি করতে পারেন, তাহলে সেগুলো Gumroad, Etsy বা Payhip এর মাধ্যমে বিক্রি করে আয় করতে পারেন। এগুলো একবার তৈরি করলেই বারবার বিক্রি হয়। যা প্যাসিভ ইনকামের দারুণ মাধ্যম।
৪৭. অ্যাপ রিভিউ বা অ্যাপ টেস্টিং করে ইনকাম
অনেক অ্যাপ ডেভেলপার তাদের অ্যাপ রিলিজের আগে ব্যবহারকারীদের দিয়ে সেটি টেস্ট করায়। UTest, UserTesting, Testbirds এর মতো প্ল্যাটফর্মে অ্যাকাউন্ট খুলে অ্যাপ বা ওয়েবসাইট টেস্টিং করে প্রতিটি রিভিউর বিনিময়ে ৫-১৫ ডলার পর্যন্ত ইনকাম করা যায়।
৪৮. ফেসবুক/ইনস্টাগ্রাম পেইজ বা গ্রুপ মডারেটর হিসেবে কাজ
অনেক বড় বড় ফেসবুক পেইজ বা ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল তাদের কনটেন্ট মডারেশন বা কমেন্ট রিপ্লাই করার জন্য ঘরে বসে কর্মী নিয়োগ দেয়। আপনি চাইলে এধরনের কাজ করে আয় করতে পারেন।
৪৯. গুগল লোকাল গাইড প্রোগ্রাম
গুগল ম্যাপসে ছবি, রিভিউ, প্রশ্নোত্তর যুক্ত করে আপনি Google Local Guide প্রোগ্রামের অংশ হতে পারেন। এটি থেকে সরাসরি টাকা না পেলেও বিভিন্ন সুবিধা ও স্পনসর ইনকাম সম্ভব হয়।
৫০. AI টুল ব্যবহারে কন্টেন্ট বা ডিজাইন তৈরি করে বিক্রি
আপনি যদি ChatGPT, Midjourney, Canva বা DALL·E এর মতো AI টুল ব্যবহার করতে জানেন, তাহলে এগুলো দিয়ে ব্লগ কনটেন্ট, ডিজাইন, ই-কমার্স প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট তৈরি করে ক্লায়েন্টদের বিক্রি করতে পারেন।
৫১. প্রোগ্রামিং বা কোডিং শেখানো ও ফ্রিল্যান্স প্রজেক্ট করা
যদি আপনি Python, JavaScript, HTML, CSS বা অন্য কোনো প্রোগ্রামিং ভাষায় দক্ষ হন, তাহলে কোডিং শেখানোর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজেক্ট নিয়ে ঘরে বসে আয় করতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ কাজ না করে ইনকাম বিকাশে প্রতিদিন | কাজ না করে ইনকাম প্রতিদিন
৫২. রেজ্যুমে বা সিভি লেখা সার্ভিস
অনেক চাকরি প্রত্যাশী আকর্ষণীয় ও পেশাগত রেজ্যুমে বানাতে পারেন না। আপনি যদি এই কাজে পারদর্শী হন, তাহলে Fiverr বা LinkedIn এ ক্লায়েন্ট খুঁজে সিভি লেখার কাজ করতে পারেন।
৫৩. ভিডিও গেম টেস্টিং এবং রিভিউ লেখা
নতুন গেম কোম্পানিগুলো তাদের গেম বাজারে ছাড়ার আগে ব্যবহারকারীদের দিয়ে গেম টেস্ট করায়। আপনি গেম খেলে ফিডব্যাক দিলে পেমেন্ট পেতে পারেন। Gamer Testing Ground, PlaytestCloud ইত্যাদি সাইটে এমন কাজ পাওয়া যায়।
৫৪. ভয়েস ওভার (Voice Over) কাজ
আপনার কণ্ঠ যদি স্পষ্ট ও শ্রুতিমধুর হয়, তাহলে বিজ্ঞাপন, ইউটিউব ভিডিও, অডিওবুক, ডকুমেন্টারি ইত্যাদিতে ভয়েসওভার দিয়ে ঘরে বসেই আয় করতে পারেন। Fiverr, Voices.com এবং Upwork এ এমন কাজ প্রচুর পাওয়া যায়।
৫৫. অনলাইন ওয়ার্কশপ বা কোর্স চালানো
আপনার যদি কোনো দক্ষতা থাকে (যেমনঃ ফটোগ্রাফি, আঁকা, কোডিং, রান্না, ডিজাইন), তাহলে Facebook Live বা Zoom এর মাধ্যমে অনলাইন ওয়ার্কশপ চালিয়ে পেইড রেজিস্ট্রেশনের ভিত্তিতে আয় করতে পারেন।